কন্যা শিশু হওয়ায় পুড়িয়ে মারলো বাবা

প্রকাশঃ আগস্ট ৪, ২০১৭ সময়ঃ ৯:৪৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৪৭ অপরাহ্ণ

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় কন্যাশিশু জন্ম নেওয়ায়  ক্ষুব্ধ হয়ে  ৯ মাসের শিশুর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে করে হত্যা করেছে তারই বাবা।

গত ৩০ জুলাই শিশুটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় পাষণ্ড বাবা জহিরুল ইসলাম। দগ্ধ শিশুটিকে হাসপাতালেও নেওয়া হয়নি। পাঁচদিন মৃত্যু যন্ত্রণায় ভুগে শুক্রবার সকালে নিজ বাড়িতেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনারাগাঁও থানায় অভিযোগ করা হলেও ওই বাবা ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্র মতে, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্ডা গ্রামের সিকিম আলীর ছেলে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি জহিরুল ইসলামের স্ত্রী কুলসুম বেগম। ৯ মাস আগে তাদের সংসারে মেয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ায় জহিরুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে পরিবারে বিরোধ দেখা দেয়। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় সন্তানসহ কুলসুমকে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে বিচার শালিস করে কুলসুম স্বামীর বাড়ি পাকুন্ডায় মেয়ে সন্তান জান্নাতুলকে নিয়ে আসেন।

গত ৩০ জুলাই (রোববার) রাত সাড়ে ১১টায় জহিরুল ইসলাম পরিকল্পিতভাবে ঘুমের মধ্যে ৯ মাসের কন্যা সন্তান জান্নাতুলের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে শিশু জান্নাতুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু একটু পর রাস্তা থেকে ফিরিয়ে এনে বাড়িতেই কবিরাজি চিকিৎসা করায় তার পরিবার। পরে শুক্রবার ভোরে বাড়িতেই জান্নাতুলের মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ মফিজুল ইসলাম দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত জান্নাতের নানী সাজিয়া বেগমের অভিযোগ, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তার মেয়ে কুলসুমকে বিয়ে দেন জহিরুলের সঙ্গে। বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসাবে দেয় কুলসুমের পরিবার। পরে কয়েকদফায় আরোও ৫০ হাজার টাকা নেয় জহিরুল। জহিরুল বর্তমানে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।

নিহত শিশু জান্নাতুলের মা কুলসুম অভিযোগ করেন, পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ঘরের ফ্যান চালু করে দেয় পাষণ্ড জহিরুল। তার মেয়েকে আগুন থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে জহিরুল তাকে জাপটে ধরে রাখে। বিভিন্ন সময়ে সে মাদকাসক্ত হয়ে ঘরে ফিরে তাকে মারধর করতো। সে তার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।

সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G